Feb 3, 2025
বিল গেটস: একশো বিলিয়ন দানের পরও শেষ হয়নি দায়িত্ব:
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | নবজাগরণ:
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস, যিনি এখন পর্যন্ত ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দান করেছেন, তিনি জানাচ্ছেন, তার দানের যাত্রা এখানেই থামবে না। মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রধান বিল গেটস বিশ্বাস করেন, "এখনো আরও দেওয়ার আছে।"
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি দারিদ্র্য দূরীকরণ ও প্রতিরোধযোগ্য রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যয় করেছেন। গেটসের মতে, সম্পদের প্রকৃত মূল্য কেবল তখনই পাওয়া যায়, যখন তা মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।
শৈশব থেকে দানের অনুপ্রেরণা:
বিল গেটসের দানের প্রতি আগ্রহ নতুন কিছু নয়। তার মা ছোটবেলা থেকেই তাকে শিখিয়েছেন, "ধনসম্পদের সঙ্গে আসে দানের দায়িত্ব।" সেই শিক্ষা থেকে গেটস আজ বিলিয়ন ডলার দান করেও তৃপ্ত নন। ২০২৫ সালে তার দাতব্য সংস্থা ২৫ বছর পূর্ণ করবে, যার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে, বিশেষত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও দারিদ্র্য বিমোচনে।
ব্যক্তিগত জীবন এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ:
এই বিপুল দানের পরও গেটসের ব্যক্তিগত জীবন অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি হাসতে হাসতে বলেন, "আমি কম বার্গার বা সিনেমা অর্ডার দেইনি।" তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তার তিন সন্তানের জন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছেন। "তারা আর্থিকভাবে ভালো থাকবে, তবে আমার সম্পদের বিশাল অংশ মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হবে," বলেন গেটস।
শৈশবের দিনগুলো ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ:
গেটস সিয়াটলের পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়ে উঠেছিলেন, যেখানে তার মা ইন্টারকমে গান গেয়ে তাদের ঘুম থেকে তুলতেন। ছোটবেলায় তিনি একা সময় কাটাতেন এবং গভীর চিন্তা করতেন। কিশোর বয়সে প্রোগ্রামিং শেখার জন্য রাতের বেলা জানালা দিয়ে পালিয়েও যেতেন!
তিনি বলেন, "আমি যদি এখন বড় হতাম, তবে আমাকে অটিজম স্পেকট্রামে ফেলা হতো।" গেটস বিশ্বাস করেন, তার মতো বহু প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ছোটবেলায় সামাজিকভাবে কিছুটা ভিন্ন ছিলেন।
বিশ্ব রাজনীতি, ফ্যাক্ট-চেকিং ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব:
সম্প্রতি, বিল গেটস সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক নৈশভোজে অংশ নেন। তিনি মনে করেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও দরিদ্র দেশগুলোর উন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাক্ট-চেকিং বাতিল করেছে, যা নিয়ে গেটস হতাশ। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক নিয়েও সতর্ক করেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার উদ্যোগকে সমর্থন করেন।
এক স্বপ্নবাজ দাতার যাত্রা:
ধনী পরিবারে জন্ম না নিলেও, বিল গেটসের মা-বাবা তার শিক্ষা নিয়ে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। তিনি স্কুলে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখার সুযোগ পেতে জাম্বেল সেল থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন, যা পরবর্তীতে তার প্রযুক্তি সাম্রাজ্য গড়ে তোলার ভিত্তি তৈরি করে।
আজ তিনি বিশ্বের অন্যতম দাতা। একশো বিলিয়ন ডলার দান করেও, গেটস মনে করেন তার দায়িত্ব শেষ হয়নি, কারণ পৃথিবীর সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। তিনি চান, তার সম্পদ এবং মেধাকে পৃথিবীর সমস্যা সমাধানে কাজে লাগাতে।