ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ফেসবুক পোস্টে ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ।
আলোচিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারী ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’-এর সুপারিশ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ফেসবুকে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন—এই সংস্কার পরিকল্পনায় দেশের ধর্মীয় ও পারিবারিক মূল্যবোধের কোনো সম্মান রাখা হয়নি।
ধর্মকে উপেক্ষা করে ‘অভিন্ন পারিবারিক আইন’?
ড. আজহারীর মতে, মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মে আলাদা পারিবারিক আইন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও একটি অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধকে চরমভাবে অবজ্ঞা করে।
‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ ধারণায় আপত্তি।
তার পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সমাজ ও বাস্তবতা বিবর্জিত কিছু গোষ্ঠী স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক ঘনিষ্ঠতাকেও ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে চিহ্নিত করতে চায়—যা সরাসরি বৈবাহিক সম্পর্কের পবিত্রতাকে অপমান করে।
সংবিধান পরিবর্তনের আভাসে উদ্বেগ।
ড. আজহারী অভিযোগ করেন, কমিশনের পক্ষ থেকে সংবিধানের ২(ক) নং অনুচ্ছেদ (যেখানে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃত) সংশোধনের সুপারিশ স্পষ্টতই ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করার দুরভিসন্ধির অংশ।
পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় কমিশন?
তিনি বলেন, যেখানে সংবিধানের ১৮(২) ধারায় পতিতাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে সংস্কার কমিশন তা ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে আখ্যায়িত করে বৈধ পেশা হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে—যা নারীত্বের চরম অবমাননা।
‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দবন্ধে এলজিবিটিকিউ মতবাদের অনুপ্রবেশ।
ড. আজহারী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ‘নারী-পুরুষ’ শব্দবন্ধ বাদ দিয়ে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ যুক্ত করার প্রস্তাব আসলে এলজিবিটিকিউ+ মতবাদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পাঁয়তারা।
‘সংস্কার’-এর নামে ধর্ম ও সমাজবিনাশের হুমকি
তার ভাষ্যে, এ প্রস্তাবনার উদ্দেশ্য হলো দেশের আবহমান পারিবারিক কাঠামো, ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক নৈতিকতা ভেঙে দেওয়া।
চূড়ান্ত দাবি: কমিশন বিলুপ্তির আহ্বান।
সবশেষে তিনি অনতিবিলম্বে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বিলুপ্তি ও তাদের বিতর্কিত প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানান। পাশাপাশি দেশের ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নারী-পুরুষের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।