Top News

মোদি-ইউনূস বৈঠক: ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনা।



 ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের উন্নতির পথে মোদি-ইউনূস বৈঠক: শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতীয় প্রতিশ্রুতি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকটি ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের আরও উন্নতির সম্ভাবনা এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদি এবং ইউনূসের আলোচনায় মূলত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সীমান্ত নিরাপত্তা, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিবাচক ভবিষ্যৎ:

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একাধিকবার স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ভারত একটি গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিশীল বাংলাদেশ চায়। মোদি জানিয়ে দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে একটি প্রগতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দেখতে চান, যেখানে নির্বাচনের একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ভূমিকা থাকবে। তাঁর মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতীয় সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিত সহযোগিতা এবং পারস্পরিক উপকারিতার ওপর।

বিক্রম মিশ্রি, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব, সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, মোদি প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের সম্পর্কের মধ্যে বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে এবং অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি করা বক্তব্য পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম প্রতিরোধের জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।


সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও উদ্বেগ:

মোদি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি আশা করেছেন যে, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত চালাবে। এই বিষয়টি নিয়ে তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং উভয়ে একমত হয়েছেন যে, এটি বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব।

নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের ভূমিকা:

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য নিয়মিত, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ভবিষ্যতে এমন একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত, যা দেশের জনগণের মতামত ও অংশগ্রহণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের দৃঢ় ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।


ভারতীয় প্রতিশ্রুতি ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি:

বৈঠক শেষে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হতে হবে গঠনমূলক এবং জনগণকেন্দ্রিক। আমরা শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।" তাঁর মতে, সীমান্তে উত্তেজনা এবং অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের সমস্যা উভয় দেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তা সমাধান করতে হবে।

এই বৈঠকটি শুধু দুই দেশের সম্পর্কের আরও গভীরতা বাড়াবে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হবে। মোদি এবং ইউনূসের এই আলোচনা প্রমাণ করে যে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এবং সুসম্পর্ক রক্ষা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

নবীনতর পূর্বতন