বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নতুন সম্ভাবনা: কুনমিংয়ে ক্যানসার হাসপাতাল
নবজাগরণ ডেস্ক
বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় যুক্ত হচ্ছে নতুন একটি ক্যানসার হাসপাতাল, যা বাংলাদেশের রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবা প্রদান করবে। চীনের কুনমিং শহরে অবস্থিত এই আধুনিক হাসপাতালটি বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি দুই দেশের স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলাম ও চীনের উপমন্ত্রী সান উইডংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ উদ্যোগ বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আধুনিক চিকিৎসার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের অনেক ক্যানসার রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, বিশেষ করে ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে। কুনমিংয়ের এই হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের পাশাপাশি খরচ ও সময় সাশ্রয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন মাত্রা
শুধু চিকিৎসা খাত নয়, বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আগামী বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে চীনা উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষা, পর্যটন, গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে নতুন প্রকল্প গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে, যা দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
বহুপাক্ষিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশ ও চীন জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বহুপাক্ষিক ফোরামগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতা উভয় দেশের বৈশ্বিক অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।
কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যৌথ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে—বিশেষ লোগো প্রকাশ, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্বীকৃতি, চিকিৎসা সহযোগিতা ও পর্যটন বিনিময় কার্যক্রম।
বাংলাদেশের জন্য কী সুযোগ তৈরি হচ্ছে?
বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। কম খরচে উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ বাড়বে, যা রোগীদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। একই সঙ্গে, চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও প্রসার ঘটবে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এমন উদ্যোগ শুধু চিকিৎসার উন্নয়নই নয়, বরং একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। সময়ই বলে দেবে, এই যৌথ প্রয়াস কতটা সফল হবে। তবে এটি নিঃসন্দেহে এক ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।