Top News

গ্যাস সংকটের প্রভাব: সুতার ব্যবসা ভারতের দিকে চলে যাচ্ছে, বস্ত্র শিল্পের বিপর্যয়:নবজাগরণ ডেস্ক

 


গ্যাস সংকটের প্রভাবে সুতার ব্যবসা ভারতের দিকে চলে যাচ্ছে: 

বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পের জন্য এক উদ্বেগজনক খবর এসেছে। গ্যাস সংকটের কারণে দেশীয় সুতার ব্যবসা ভারতেও চলে যাচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল এক সংবাদ সম্মেলনে এই সংকটের সমালোচনা করেছেন এবং বলছেন, "গত বছর ভারত থেকে ২৭০ কোটি ডলারের সুতা আমদানি হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।" কিন্তু বাংলাদেশে গ্যাস সংকটের কারণে অনেক বস্ত্রকল এখন অর্ধেক সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে, এবং কয়েকটি তো বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, দেশে গ্যাস সংকটের ফলে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলোও কষ্টে পড়ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বস্ত্রকলগুলো তাদের প্রয়োজনীয় সুতা সরবরাহ করতে পারছে না, যা ভারতীয় বাজারের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করছে। শওকত আজিজ রাসেল আরও মন্তব্য করেছেন, "গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে দেশের বস্ত্র শিল্প টেকসই হবে না, একে একে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।" এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ভীতিকর বার্তা হিসেবে উঠে এসেছে, কারণ দেশের শিল্পকারখানাগুলোর অদৃশ্য ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং শিল্পে বিনিয়োগের অভাব এই খাতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বড় প্রশ্ন তৈরি করছে। ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণে অদৃশ্য জটিলতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৃষ্টিভঙ্গি এখানে বড় ভূমিকা পালন করছে। শওকত আজিজ রাসেল এর জন্য সরকারকে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া, তিনি বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কে বলেন, "চীনে কারখানা বন্ধ হচ্ছে, কিন্তু আমরা এখনো আমাদের সক্ষমতা দেখাতে পারিনি। ডলার সংকট এবং ব্যাংক ঋণের সঙ্কট এখানে বড় প্রতিবন্ধকতা।" শিল্পের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা নিয়ে নানা উদ্বেগের মধ্যে, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হওয়ার উপরই নির্ভর করছে এই খাতের ভবিষ্যৎ।

এদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যে বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী "ডিটিজি" ঢাকায় বসুন্ধরার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। যদিও প্রদর্শনীটি আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য একটি সুযোগ, তবে গ্যাস সংকটের কারণে অনেক বস্ত্রকল মালিকদের মনে সন্দেহ ও উদ্বেগ রয়েছে যে, ভবিষ্যত তা কতটা সুখকর হবে।

এই সংকটের মধ্যেও দেশে শিল্প খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সেগুলোকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হলে প্রয়োজন একটি সুসংহত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। রাষ্ট্রীয় সহায়তা এবং শিল্প খাতে জোরালো নীতি প্রণয়ন একান্ত প্রয়োজন, যাতে দেশের বস্ত্র শিল্প আবার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।

নবীনতর পূর্বতন