Top News

দক্ষিণ কোরিয়ায় ডিপসিক অ্যাপ নিষিদ্ধ: প্রাইভেসি উদ্বেগে নতুন সংকট:নবজাগরণ ডেস্ক?

 


দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ডিপসিক অ্যাপ অপসারণ: প্রাইভেসি উদ্বেগে নতুন মোড়

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চ্যাটবট ডিপসিক, যা প্রথম সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী অর্জন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল, এবার বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, যার তথ্য সুরক্ষা আইন অত্যন্ত কঠোর, সম্প্রতি দেশটির অ্যাপ স্টোর থেকে ডিপসিক অ্যাপটি অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপের মূল কারণ, ডিপসিকের ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ব্যাপারে উদ্বেগ।

দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, ডিপসিকের ডেভেলপাররা যদি দেশের আইন অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এবং তথ্য সুরক্ষা নীতিগুলো সংশোধন না করে, তবে এই অ্যাপ পুনরায় দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে ফেরত আসবে না। তবে, যারা ইতোমধ্যে ডিপসিক ব্যবহার করছেন, তারা অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন এবং ওয়েবসাইট থেকেও অ্যাক্সেস করতে পারবেন।

ডিপসিকের চীনা ডেভেলপাররা নিজেদের অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, যা অনেক দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দক্ষিণ কোরিয়া একমাত্র দেশ নয়, যেখানকার সরকার এই অ্যাপটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইতোমধ্যেই, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান এবং ইতালি এর ব্যবহারে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষ করে, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ ডিপসিকের গোপনীয়তা নীতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন তাদের নিরাপত্তা সুরক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করছে, তখন ডিপসিকের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা তার প্রভাব আরও বাড়িয়েছে। আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশগুলোর আইনপ্রণেতারা বলছেন, এই অ্যাপটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, এবং ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে সরকারি ডিভাইসে ডিপসিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।



এই পরিস্থিতিতে, ডিপসিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে কম খরচে শক্তিশালী মডেল প্রদানের দাবি করে, তবে বিশ্বব্যাপী এটির গোপনীয়তা নীতির প্রতি আগ্রহ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে, চীনের সার্ভারগুলোতে তথ্য সংরক্ষণ হওয়া যে উদ্বেগ তৈরি করেছে, তা আরও জোরালো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সরকারও স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তাদের নিষেধাজ্ঞা চীনা মালিকানার কারণে নয়, বরং এটি নিরাপত্তার জন্য "অগ্রহণযোগ্য ঝুঁকি" সৃষ্টি করতে পারে বলে তাদের ধারণা। এরই মধ্যে, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে, যেখানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

বিশ্বের নেতৃস্থানীয় আইটি শক্তিগুলোর মধ্যে একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুলের সন্ধান যেন একটি ক্রমবর্ধমান জটিলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে শুধুমাত্র প্রযুক্তি নয়, বরং মানুষের গোপনীয়তা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে নতুন চিন্তা এবং আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।

এখন দেখার বিষয়, ডিপসিক তাদের তথ্য সুরক্ষা নীতি কীভাবে সংশোধন করে, এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করে।

নবীনতর পূর্বতন