ট্রাম্পের দাবির সত্যতা কতটুকু? ইউক্রেন যুদ্ধ ও বাস্তবতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | নবজাগরণ
সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে কিছু দাবি তুলেছেন, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার মন্তব্যগুলো কতটা সত্য এবং বাস্তবতার সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ? আসুন, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তা বিশ্লেষণ করি।
জেলেনস্কি কি স্বৈরশাসক?
ট্রাম্প দাবি করেছেন, জেলেনস্কি স্বৈরশাসক, কারণ ইউক্রেনে নির্বাচন হয়নি। বাস্তবতা হলো, ইউক্রেনে বর্তমানে যুদ্ধকালীন সামরিক আইন কার্যকর, যার কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।
২০১৯ সালে জেলেনস্কি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবং তখন তার জয়জয়কার ছিল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অনেক দেশেই নির্বাচন স্থগিত থাকে, যা কোনোভাবেই স্বৈরতন্ত্রের পরিচায়ক নয়।
জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ৪%?
ট্রাম্পের আরেকটি দাবি হলো, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র ৪%। তবে এ সংক্রান্ত কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং সাম্প্রতিক একাধিক জরিপ অনুযায়ী, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা এখনো ৫৭% এর কাছাকাছি। যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে একজন নেতা এতটা জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারছেন, সেটিই তার প্রতি জনগণের আস্থার প্রমাণ।
কে যুদ্ধ শুরু করেছিল?
ট্রাম্পের বক্তব্য, ইউক্রেনই যুদ্ধ শুরু করেছে। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া একতরফাভাবে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালায়, যা এখনো চলছে।
এর আগেও ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করেছিল, যা আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ হিসেবে স্বীকৃত। তাই এই যুদ্ধের সূত্রপাত ইউক্রেনের নয়, বরং রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলাফল।
উপসংহার: তথ্যের অপব্যবহার?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই দাবিগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এগুলোর বেশিরভাগই বিভ্রান্তিকর বা অতিরঞ্জিত। অনেকাংশে এগুলো রাশিয়ার প্রচারণার সাথে মিলে যায়, যা পশ্চিমা বিশ্বে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করে তথ্য ও বাস্তবতা যাচাই করে তবেই যেকোনো দাবিকে সত্য বলে মেনে নেওয়া উচিত—বিশেষত আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে, যেখানে প্রতিটি মন্তব্যের কূটনৈতিক প্রভাব থাকে।