২৮শে জানুয়ারি :
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে এসেছে: একটি ঐতিহাসিক বর্ণনা
নামাজ মুসলিমদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পবিত্র ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে হাদিসে, যা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
মিরাজের রাতের বিশেষ ঘটনা
বুখারি শরিফে উল্লেখ আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মিরাজের রাতেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়।
হজরত আবু যার (রা.)-এর বর্ণনা মতে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আমি মক্কায় থাকা অবস্থায় এক রাত আমার ঘরের ছাদ খুলে দেওয়া হলো। জিবরাইল (আ.) এসে আমার বুক বিদীর্ণ করে তা জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করলেন। এরপর হিকমত ও ইমান ভরা সোনার পাত্র এনে আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিলেন। এরপর আমাকে নিয়ে দুনিয়ার আকাশে উঠলেন।”
আকাশ ভ্রমণ এবং নবীদের সাক্ষাৎ
দুনিয়ার আকাশে গিয়ে মহানবী (সা.) প্রথমে আদম (আ.)-এর সাক্ষাৎ পান। তিনি দেখেন, আদম (আ.)-এর ডান পাশে জান্নাতি এবং বাম পাশে জাহান্নামি মানুষের রুহ রয়েছে। ডান দিকে তাকালে আদম (আ.) হাসতেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদতেন।
এরপর তিনি দ্বিতীয় আসমানে ইদ্রিস (আ.), তৃতীয় আসমানে মুসা (আ.), চতুর্থ আসমানে ঈসা (আ.), এবং ষষ্ঠ আসমানে ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
নামাজ ফরজের নির্দেশ
সবশেষে মহানবী (সা.) আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেই আল্লাহ তাঁর উম্মতের জন্য ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন।
তবে, নবী মুসা (আ.)-এর পরামর্শে রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর কাছে বারবার আবেদন করেন। এর ফলে, ৫০ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। কিন্তু আল্লাহ ঘোষণা করেন, “পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পূণ্য ৫০ ওয়াক্তের সমান হবে।”
একটি ঐতিহাসিক শিক্ষা
মিরাজের এই ঘটনা শুধু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সূচনা নয়, এটি মুসলমানদের ইবাদত, প্রার্থনা এবং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদের আল্লাহর কাছে সমর্পণ করি।