২৮শে জানুয়ারি :
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নতুন পরিকল্পনা: সাত কলেজে আসছে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়:
শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন দিগন্ত: সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা
রাজধানীর সাতটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই পদক্ষেপটি দীর্ঘদিনের শিক্ষার মানোন্নয়নের দাবি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে আরও দক্ষতা আনার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইতোমধ্যেই এই প্রক্রিয়ায় কাজ শুরু করেছে এবং ধারাবাহিক আলোচনা চলছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে।
পরিকল্পনার পেছনে কারণ
ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ—এই সাতটি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু, প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী এবং এক হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়ে এগুলোর পরিচালনা করতে গিয়ে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা নির্ধারণ এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বারবার বাধা এসেছে।
অধিভুক্তির আট বছর পরেও সেশনজট, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, শিক্ষকসংকট এবং পর্যাপ্ত গবেষণার অভাবের মতো সমস্যা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে, এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশও বেড়েছে।
আন্দোলন এবং নতুন সিদ্ধান্ত
সম্প্রতি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা টানা তিন মাস আন্দোলন চালানোর পর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে, একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে।
বড় আকার ধারণ করা সমস্যা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আসার পর, একাংশ শিক্ষার্থীরা ভালো সুযোগ পেলেও বেশ কিছু সমস্যা সমাধান হয়নি। শিক্ষকসংকট, শ্রেণিকক্ষের অভাব, পরীক্ষার ফলাফলে বিলম্ব এবং বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষাগারে উপকরণের অভাব শিক্ষার্থীদের জন্য বিশাল প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “অফিসিয়াল কাজের ব্যস্ততা আর শিক্ষকসংকটের কারণে, আমরা অনেক সময় সঠিক সময়ে ক্লাস বা পরীক্ষা পাই না।”
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে?
ইউজিসি জানিয়েছে, পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন মডেল নিয়ে কাজ চলছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন করার জন্য অবশ্যই সময় এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। তবে, একবার যদি কার্যকরভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়, তা হলে এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে।
আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রত্যাশা
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে সরকারের এই উদ্যোগটি ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। তবে, এই পদক্ষেপ সফল হতে হলে সঠিক পরিকল্পনা এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
নবজাগরণ পাঠকদের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, নিরপেক্ষ এবং তথ্যপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করতে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।