২৮শে জানুয়ারি :
এইচএমপিভি: আতঙ্ক নয়, সচেতন হোন
শীত এলে শ্বাসযন্ত্রের রোগ বাড়ে—এ কথা নতুন নয়। তবে এবার আলোচনায় উঠে এসেছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। বিশেষত, চীনের উত্তরাঞ্চলে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। কিন্তু আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকাই সেরা উপায়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এইচএমপিভি: কী এই ভাইরাস?
২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হওয়া এইচএমপিভি একটি আরএনএ-ভিত্তিক ভাইরাস। এটি শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে। লক্ষণগুলো অনেকটা সাধারণ সর্দি-জ্বর বা ফ্লুর মতো। তবে গুরুতর হলে ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশু, বয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল—তাদের জন্য ভাইরাসটি বেশি বিপজ্জনক।
লক্ষণগুলো কী?
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দেখা দিতে পারে:
জ্বর ও কাশি
নাক বন্ধ বা সর্দি
শ্বাসকষ্ট
ত্বকে ফুসকুড়ি
লক্ষণ দেখা দিতে ৩-৬ দিন সময় লাগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে।
ভাইরাসটি ছড়ায় কীভাবে?
এইচএমপিভি ছড়ায়:
হাঁচি-কাশির ড্রপলেটের মাধ্যমে
স্পর্শের মাধ্যমে
দূষিত পৃষ্ঠ থেকে।
কোভিড-১৯ এর মতোই এটি ছড়াতে পারে। তাই পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং সতর্ক থাকা খুবই জরুরি।
আতঙ্কিত হওয়ার কিছু আছে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচএমপিভি কোনো নতুন ভাইরাস নয়। বহু বছর ধরেই এটি মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশেও আগে এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে, সচেতন থাকুন।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
ভাইরাস থেকে বাঁচতে কয়েকটি সহজ অভ্যাস গড়ে তুলুন:
বাইরে গেলে মাস্ক পরুন।
২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।
জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।
সর্দি-কাশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পুষ্টিকর খাবার ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
হাঁচি-কাশির সময় মুখ টিস্যু বা হাতের কনুই দিয়ে ঢাকুন।
চিকিৎসা: কী করা হচ্ছে?
এইচএমপিভির জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। চিকিৎসা মূলত লক্ষণ অনুযায়ী হয়। যেমন:
জ্বর কমানোর জন্য ওষুধ
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
পুষ্টিকর খাবার
গুরুতর রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
শেষ কথা
শীতকালীন রোগ মানেই আতঙ্ক নয়। সঠিক তথ্য এবং সচেতনতা দিয়ে যে কোনো ভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন।