২৬ শে জানুয়ারি :
>>টেস্ট ক্রিকেটের নতুন দিগন্ত: দুই স্তরের ব্যবস্থার মাধ্যমে উত্তেজনা ধরে রাখার চমকপ্রদ প্রস্তাব আনলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ইয়ান চ্যাপেল:
আইসিসির চ্যালেঞ্জ: টেস্ট ক্রিকেটে দুই স্তরের বাস্তবায়ন সম্ভব?
ক্রিকেটের মাঠে উত্তেজনা ধরে রাখতে কে না চায়! তবে পাঁচ দিনের এই ঐতিহাসিক ফরম্যাটে প্রতিযোগিতার মান নিয়ে চিন্তিত অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল। তাঁর দাবি, টেস্ট ক্রিকেটের গৌরব টিকিয়ে রাখতে দুই স্তরের ব্যবস্থার বিকল্প নেই। যেন এই একটি পদক্ষেপই টেস্ট ক্রিকেটকে আধুনিক দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
সম্প্রতি ইএসপিএনক্রিকইনফোতে প্রকাশিত এক লেখায় ৮১ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের মতো নবাগত দলগুলোর টেস্ট মর্যাদা নিয়ে। তাঁর ভাষায়, “যদি মাঠ নেই, আর্থিক স্থিতিশীলতা নেই, তাহলে টেস্ট মর্যাদা কেন দেওয়া হয়েছে? এমনকি আফগানিস্তানে টেস্ট আয়োজনের মতো পরিবেশই বা কোথায়?”
দুই স্তরের প্রস্তাব: প্রতিযোগিতায় নতুন মোড়
চ্যাপেলের প্রস্তাব মতে, টেস্ট দলগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ সাতটি দল থাকবে প্রথম স্তরে, যেখানে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আর দ্বিতীয় স্তরে থাকবে অন্য দলগুলো, যাদেরকে নিজেদের উন্নতিতে সময় ও সুযোগ দেওয়া হবে। উত্তরণ এবং অবনমনের নিয়মের মাধ্যমে এই দুই স্তরের মধ্যে প্রতিযোগিতা জিইয়ে রাখা সম্ভব হবে, যা খেলাটির উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
“অধিকাংশ দেশ টেস্ট খেলায় ধারাবাহিক পারফর্ম করতে পারে না,” উল্লেখ করে চ্যাপেল বলেছেন, “তাই শক্তিশালী দলগুলোর টিকে থাকার পথ আরও সহজ করতে হবে। গড়পড়তা দলগুলো টেস্টে যুক্ত করাটা আইসিসির বড় ভুল হবে।”
নারীদের অধিকার আর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন"
চ্যাপেলের তীর ছুটেছে আফগানিস্তানের দিকেও। নারীদের প্রতি তালেবানের কঠোর আচরণ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা—এসব বিষয় ক্রিকেটকেও প্রভাবিত করে। তিনি বলেন, “যদি দেশের ভেতরে টেস্ট আয়োজনই সম্ভব না হয়, তবে সেই দলের টেস্ট মর্যাদা থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ: উত্তেজনা নাকি গড়পড়তা?
ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বোর্ড এরই মধ্যে এই দুই স্তরের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে চ্যাপেলের বক্তব্য এই আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ক্রিকেটবিশ্বে এখন প্রশ্ন—এই দুই স্তর কি আদৌ টেস্ট ক্রিকেটকে প্রাণবন্ত করতে পারবে?
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই স্তরের ব্যবস্থায় দুর্বল দলগুলোর মান বাড়বে, আর শীর্ষ দলগুলো নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে আরও পরিশ্রম করবে। আর এতে দর্শকরা পাবেন আরও উত্তেজনায় ভরপুর খেলা।
নবজাগরণ বিশ্লেষণ
টেস্ট ক্রিকেটে চ্যাপেলের এই প্রস্তাব যেন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি শুধু খেলার মান উন্নত করবে না, বরং দর্শকদের মনে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আরও গভীর করবে। “পাঁচ দিনের ম্যাচে ধৈর্য আর কৌশলের যে সৌন্দর্য, তা ধরে রাখতে হলে প্রতিযোগিতার ভারসাম্য রাখা জরুরি,” বলেছেন চ্যাপেল।
তবে আইসিসি কি এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে সাহসী পদক্ষেপ নেবে? নাকি সবকিছু আগের মতোই চলবে? উত্তরের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
নবজাগরণ ডেস্ক