Top News

"গাজার আকাশে শান্তির সুর: যুদ্ধবিরতির পরের আশা ও শোক"NOBO JAGORON

 ১৭ই-জানুয়ারি-শুক্রবার:



গাজার আকাশে শেষ পর্যন্ত শান্তির সুর বাজছে। ১৫ মাসের ভয়াবহ যুদ্ধের পর হামাস ও ইসরায়েল অবশেষে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে, যার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে কাতার। চুক্তি অনুযায়ী, গাজায় নতুন জীবন ফিরে আসবে—বন্দি বিনিময় হবে, যুদ্ধবন্দিরা মুক্তি পাবে, এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের হারানো ঘরে ফিরে যাবে।


এ খবরের সঙ্গে সঙ্গে গাজার রাস্তায় এক অদ্ভুত উদযাপন শুরু হয়েছে। তবে আনন্দের এই মুহূর্তের মধ্যে যে শোক লুকিয়ে তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। হাজার হাজার মানুষ এই যুদ্ধে হারিয়েছে তাদের প্রিয়জন, তাদের ঘরবাড়ি, তাদের স্বপ্ন। ৭ অক্টোবরের সেই ভয়াবহ হামলার পর গাজার প্রতিটি পাথর যেন গল্প বলে—গল্প সেই দুঃখের, যন্ত্রণার, একে একে হারানো জীবনের।


তবে, শান্তির এই আভা যখন গাজায় পৌঁছেছে, তখন এই শান্তির পেছনে যে দুঃখের ইতিহাস রয়েছে, তা মুছে ফেলা সহজ নয়। ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। গাজায় একসময় যে কাঠামোগুলি ছিল জীবনের ভিত্তি—স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির—তা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পরও, গাজার মানুষ, যারা এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বেঁচে আছেন, তারা এখন শুধু একটাই প্রশ্ন করেন—"আমরা কি সত্যিই ফিরে যেতে পারব?"


অনেকেই বলছেন, "আমরা তো স্বপ্ন দেখছি, কিন্তু আমাদের হারানো ঘর, হারানো প্রিয়জনদের স্মৃতির পাশে তা কীভাবে পূর্ণ হবে?" তবে, শেষ পর্যন্ত গাজার এই মাটিতেই ফিরে যাবেন তারা। কারণ, "ঘর, দেশ আর সন্তান—এগুলোই তো আমাদের আসল সম্পদ।"


যুদ্ধবিরতির এই মুহূর্তটি একদিকে আনন্দের, অন্যদিকে শোকের। তবে, গাজার ফিলিস্তিনিরা জানেন, একদিন তারা এই মাটিতে ফিরে আসবেন, নিজেদের নতুন জীবন শুরু করবেন। "বাড়ির মতো আর কোনো জায়গা নেই।" তাদের অন্তরে এখন একটাই সুর—বাড়ি ফিরে যেতে হবে, ঘর ফিরে পেতে হবে।


এই খবরটি শুধু গাজার, না—এই খবরটি আমাদের সকলের, মানবতার জয়গান। শান্তির প্রথম আলো যদি গাজায় ছড়িয়ে পড়ে, তবে আশা করা যায়, একদিন সেই আলো পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে যাবে।

নবীনতর পূর্বতন