Top News

ন্যায়বিচারের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ: নবী সুলায়মান (আ.)-এর গল্প':নবজাগরণ :

৩০শে জানুয়ারি :




সুন্দর বিচার: নবী সুলায়মান (আ.)-এর প্রজ্ঞার অনন্য দৃষ্টান্ত:

মানবজাতির ইতিহাসে এমন কিছু বিচার রয়েছে, যা যুগে যুগে প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার অনন্য উদাহরণ হয়ে রয়েছে। তেমনই এক বিস্ময়কর রায় দিয়েছিলেন আল্লাহর নবী সুলায়মান (আ.), যা ন্যায়বিচারের চূড়ান্ত সৌন্দর্যের প্রতিফলন।

একটি সন্তান, দুটি দাবি:

দুজন নারী, আর তাদের সঙ্গে দুটি ফুটফুটে শিশু। একদিন একটি নেকড়ে এসে তাদের একজনের সন্তানকে ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু সমস্যার শুরু তখন, যখন উভয় নারী জীবিত শিশুটিকে নিজের বলে দাবি করে বসেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, কে প্রকৃত মা—সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছিল না।

এই জটিল বিরোধ মীমাংসার জন্য তারা আশ্রয় নেন হজরত দাউদ (আ.)-এর কাছে। তিনি বিচারের পর মধ্যবয়সী নারীর পক্ষেই রায় দেন এবং শিশুটিকে তার হাতে তুলে দিতে বলেন। কিন্তু সত্য কি এটাই ছিল?

সুলায়মান (আ.)-এর প্রজ্ঞাময় রায়:

বিচার শেষে তারা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন ঘটনাটি জানাজানি হয় হজরত দাউদ (আ.)-এর পুত্র, নবী সুলায়মান (আ.)-এর কাছে। তিনি তখন নতুন এক উপায়ে সত্য উন্মোচনের সিদ্ধান্ত নিলেন।

তিনি বললেন, "আমাকে একটি ছুরি দাও, আমি শিশুটিকে সমান দুই ভাগ করে উভয়ের মাঝে বণ্টন করে দেব।"

এই কথা শোনা মাত্রই কম বয়সী নারীটি কান্নায় ভেঙে পড়ে বললেন, "না, অনুগ্রহ করে এমনটি করবেন না! আমি মেনে নিলাম, শিশুটি ওই নারীরই।"



এই মুহূর্তেই সুলায়মান (আ.) বুঝতে পারলেন, প্রকৃত মা আসলে তিনিই। কারণ একজন প্রকৃত মা কখনোই নিজের সন্তানের জীবন বিপন্ন হতে দেবে না। তখনই তিনি শিশুটিকে তার প্রকৃত মায়ের হাতে তুলে দিলেন।

বিচার ও প্রজ্ঞার অনন্য শিক্ষা:

এই ঘটনা শুধুই একটি বিচারের কাহিনি নয়; বরং এটি প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও সত্য উন্মোচনের অসাধারণ নিদর্শন। এখানে মূল শিক্ষা হলো, সত্য কখনো চাপা থাকে না। প্রজ্ঞার আলোয় তা উদ্ভাসিত হবেই।

আজকের সমাজেও যখন সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, তখন সুলায়মান (আ.)-এর এই বিচার আমাদের শিখিয়ে দেয়, কীভাবে যুক্তি, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা দিয়ে সত্যকে উন্মোচিত করা যায়।

যুগে যুগে ন্যায়বিচারের এই উদাহরণ মানুষকে ন্যায়-নীতির পথে চলতে অনুপ্রাণিত করবে, ইনশাআল্লাহ।

নবীনতর পূর্বতন